‘আমরা গ্রহের সবচেয়ে সফল দল, পরাজয়ও ইতিহাসের অংশ’

কোয়ার্টার ফাইনাল নামক এক বৃত্তে আটকে গেছে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। সর্বশেষ কাতার বিশ্বকাপের পর এবারের কোপা আমেরিকায়ও তাদের বিদায় হয়ে গেছে কোয়ার্টার থেকে। তবে এবারের হারটা সেলেসাও ভক্তদের মনে হয়তো বড় ক্ষত–ই তৈরি করেছে। বিশেষত কাতার বিশ্বকাপের পর থেকে ব্রাজিল চেনা ছন্দের খোঁজে মরিয়া। ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বেও নাজুক অবস্থানে (টেবিলের ছয় নম্বরে), কোপা থেকে বিদায় সেই তিক্ততা আরও বাড়িয়েছে।

এমন অবস্থায় ট্রল আর সমালোচনার পাত্রে পরিণত হয়েছে ব্রাজিলিয়ান ফুটবল। কেউ কেউ তো ফুটবলের সবচেয়ে অভিজাত দলটির শেষও দেখে ফেলেছে। দেশটির ফুটবলার ও সমর্থকদের মনে তৈরি হওয়া সেই ক্ষতে কিছুটা প্রলেপ দেওয়ার চেষ্টা করেছে ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশন (সিবিএফ)। ব্রাজিলের অতীত ইতিহাসের নানা উত্থান-পতনের গল্প স্মরণ করিয়ে দিয়ে সংস্থাটি আবারও জেগে ওঠার প্রেরণাদায়ী ভিডিও প্রকাশ করেছে।

ব্রাজিলে ফুটবল সংস্কৃতি অনেক মজবুত এবং কিংবদন্তির উত্থানও হয়েছে অসংখ্য। সিবিএফের প্রকাশিত ভিডিওতে পেলে-গারিঞ্চা থেকে শুরু করে কাফু, রবার্তো কার্লোস ও রোনালদো নাজারিওদের জয়ের মুহূর্ত তুলে ধরা হয়েছে। আবার দেখানো হয়েছে পরাজয়ের হতাশায় নিমগ্ন ফুটবলারদের অশ্রুসিক্ত দৃশ্যও। নিজেদের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা ভিডিও’র ক্যাপশনে লেখা হয়েছে– ‘এটাই প্রথমবার নয় যে তারা আমাদের শেষ ঘোষণা করে ফেলেছে, কিন্তু বিশ্বাস করুন, আমরা আবারও জিতব। এটাই ব্রাজিল।’

এরপর ভিডিওতে ব্রাজিল ফুটবলের উত্থান-পতনের দৃশ্যের পাশাপাশি ধারাবিবরণী চলতে থাকে। যেখানে বলা হয়, ‘আমরা এই গ্রহের সবচেয়ে সফল দল, কিন্তু পরাজয়ও আমাদের ইতিহাসের অংশ। আমরা যতবার জিতেছি, তার চেয়ে বেশি হেরেছি। এটা পরিসংখ্যান—আমরা ৫টি বিশ্বকাপ জিতেছি এবং হেরেছি ১৭টি। তারা আমাদের শেষ দেখে ফেলার আগেও এমন পরিস্থিতি পার করে এসেছি, এভাবে একবার নয়, বারবার।’

পরাজয়ই ব্রাজিলের ইতিহাস তৈরি করেছে বলেও মন্তব্য করা হয় ওই ভিডিওতে, ‘পরাজয়ই আমাদের ইতিহাস তৈরি করেছে। কিন্তু একটা বিষয় সব সময় মনে রাখতে হবে যে আমরা এখানে আগেও ছিলাম। তারা একাধিকবার আমাদের শেষ দেখে ফেলেছে। কিন্তু মানুষ দেখেছে কে ছড়ি ঘুরিয়েছে। এক, দুই…পাঁচবার।’

আজ হারলেও, আগামীকাল ব্রাজিলই ট্রফি জিতবে বলেও উচ্চারিত হয় দৃঢ় বাণী, ‘কীভাবে জেগে উঠতে হয়, ব্রাজিলিয়ানদের চেয়ে ভালো আর কেউ জানে না। ব্রাজিলের আছে তিনটি এস—সুপারাসাও (প্রত্যাবর্তন), সানগে (রক্ত) ও সুয়োর (ঘাম)। বল যতদিন গোল থাকবে, আমরা খেলাটিতে থাকব। মনে রেখো, এটাই ব্রাজিল। আমরা আজ হারছি, কিন্তু আগামীকাল ট্রফি আমাদের। আর বিশ্বাস করুন, আগামীকাল আমরাই জিতব।’

উল্লেখ্য, কোপার কোয়ার্টারে ব্রাজিল মুখোমুখি হয়েছিল শক্তিশালী উরুগুয়ের। যেখানে পুরো ৯০ মিনিটে কোনো দলই গোল করতে পারেনি। পরে টাইব্রেকারে ব্রাজিল ৪-২ গোলের তিক্ত হার দেখে বিদায় নিশ্চিত করে। বিপরীতে সেমিফাইনালে পা রাখে উরুগুইয়ানরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *