‘বারবার বললাম বাবা বাড়ি ফিরে আয়, তাও আসলি না’

রাজধানীর উত্তরায় বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে কোটা আন্দোলনের সংঘর্ষে গুলিতে নিহত হন আসিফ হাসান। ছেলের এমন মৃত্যুর খবর শুনে মা শিরিন বেগম বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। শোকস্তব্ধ বাবা। 

মা শিরিনা বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘বারবার বললাম বাবা বাড়ি ফিরে আয়, বাড়ি ফিরে আয়। আসলি না। ওরা তোকে কেড়ে নিয়ে গেল। আসিফ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজি আর মেধাবী ছেলে, ওরা ছেলেটাকে কেড়ে নিয়ে গেল।’ আর কিছু বলার মতো শক্তিও তার ছিল না। প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক আইনি সহযোগিতা নিতে ঢাকায় গেছে তার স্বামী মাহমুদ আলম গাজি। তার আহাজারি সবাইকে আবেগি করে তোলে।

২০০৩ সালের ৫ আগস্ট তারিখে সাতক্ষীরার সীমান্তবর্তী উপজেলা দেবহাটার নওয়াপাড়া ইউনিয়নের আস্কারপুরে গ্রামে জন্ম নেয় আসিফ। বাবা মাহমুদ আলী গাজি ঘেরে মাছের ব্যবসা করেন। ২০১৪ সালে ১১ বছর বয়সে আসিফের মা মারা গেলে শিরিনা বেগমকে বিয়ে করে ঘরে নিয়ে আসেন মাহমুদ আলম গাজি। এরপর থেকে শিরিনা বেগম আদর স্নেহে বড় করে তোলেন দুই জমজ ভাই আসিফ হাসান ও রাকিব হাসানকে। আসিফ রাজধানীর নর্দান ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। আর রাকিব সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্র।

উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ আল ফেরদৌস আলফা বলেন, আসিফের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী আসিফের পরিবারকে নগদ অর্থ দিয়েছেন, দিয়েছেন ডিপোজিট অর্থ। স্থানীয় সাংবাদিক খায়রুল ইসলাম জানান, আসিফ ছোটবেলা থেকে ভদ্র ও নামাজি ছিলেন। তার মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ পুরো গ্রামবাসী আসিফের ভাই রাকিব বলেন, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন সবসময় আমাদের পাশে রয়েছে। আমাদের পরিবার প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতাও পেয়েছে। এলাকার সর্বস্তরের মানুষ আমাদের খোঁজখবর নিচ্ছেন। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *