সম্পদের পাহাড় গড়া কামরুল স্ত্রীকে দিয়েছেন ৫ জাহাজ

পুলিশের এসআই পদে যোগ দিয়ে সিএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হয়েছেন কামরুল হাসান। এসময়ের মধ্যে নিজে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়, পাশাপাশি স্ত্রী সায়রা বেগমকে পাঁচটি জাহাজ (বার্জ) কিনে দিয়েছেন তিনি। স্ত্রীর নামেও গড়েছেন অঢেল সম্পদ। সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে এডিসি কামরুল হাসানের বিলাসবহুল বাড়ি, গাড়িসহ বিপুল সম্পদের তথ্য উঠে এসেছে। এরই মধ্যে এসব সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

দুদকসূত্রে জানা গেছে, এমভি প্যাসিফিক রাইডার, এমভি পানামা ফরেস্ট-১, এমভি রাইসা তারাননুম, বার্জ আল বাইয়েত ও নাম না জানা একটি জাহাজের এক তৃতীয়াংশের মালিক এডিসি কামরুলের স্ত্রী সায়মা বেগম। এসব জাহাজে ‌১ কোটি ৫১ লাখ ৩১ হাজার ৩৮০ টাকার বিনিয়োগ দেখিয়েছেন তিনি। তবে বাস্তবে এ বিনিয়োগ তিন থেকে চার গুণ বেশি হবে বলে সংশ্লিষ্টদের ধারণা। এসব জাহাজ পরিচালনা করছে সায়মার মালিকানাধীন ‘সওদাগর নেভিগেশন’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের পোর্টল্যান্ড সাত্তার টাওয়ারে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির অফিস।

দৃশ্যত কোনো আয় না থাকলেও সায়মা বেগমের ১ কোটি ২৫ লাখ টাকার স্থাবর ও ১ কোটি ৯৯ লাখ ২৮ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদসহ মোট ২ কোটি ৫৩ হাজার ২৪০ টাকার সম্পদ থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এদিকে কামরুল হাসানের নামে ১৩ কোটি ৯৬ লাখ ৩১ হাজার ৯১১ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য পেয়েছে দুদক। যার মধ্যে ১২ কোটি ৭২ লাখ ৯২ হাজার ২১৬ টাকার স্থাবর এবং ১ কোটি ২৩ লাখ ৩৯ হাজার ২১৬ টাকার অস্থাবর সম্পত্তি। পুলিশে ইন্সপেক্টর পদে পদোন্নতি পেয়ে চট্টগ্রামের ৮টি থানায় ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে এসব সম্পত্তি গড়েছেন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা কামরুল হাসান।

চট্টগ্রাম নগরের সবচেয়ে অভিজাত খুলশী আবাসিক এলাকায় ‘ফয়জুন ভিস্তা’ অ্যাপার্টমেন্টে অষ্টমতলায় সি-৭ তে কামরুল হাসানের ২ হাজার ৫৭০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট ও ১৩৬ বর্গফুটের গাড়ি পার্কিং রয়েছে। আয়কর নথিতে এই সম্পদের মূল্য ৭ লাখ ২৫ হাজার টাকা দেখানো হলেও ফ্লাটটির বর্তমান বাজারমূল্য কমপক্ষে ৮ কোটি টাকা। এছাড়া নগরীর পশ্চিম নাসিরাবাদে সাত শতক জমিতে ৪তলা বাড়ি করেছেন তিনি। এটি নির্মাণে ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা খরচ দেখিয়েছেন তিনি। তবে ভূমি ও ভবনের বাজারমূল্য কমপক্ষে ৮ কোটি টাকা বলে জানা গেছে। এছাড়া চট্টগ্রাম নগরের উত্তর হালিশহর, নাসিরাবাদ, চান্দগাঁও এলাকা শতাধিক ফ্ল্যাট ও দোকান রয়েছে কামরুলের।

ঢাকার সাভারে সাভার সিটি সেন্টার নামে ১২ তলা ভবনের মালিকদের চারজনের একজন এডিসি কামরুল। ওই ভবনে ৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা বিনিয়োগ দেখানো হয়েছে। তবে সাভার সিটি সেন্টারের ফ্লাট ও দোকান সংখ্যা হিসাব করলে এখানে প্রায় শতকোটি টাকার মালিক তিনি। সাভার সিটি টাওয়ার নামে একটি ১০ তলা আবাসিক ভবনের ৫৪টি ফ্লাটেরও অংশীদার কামরুল। সাভারে ১৫৪ শতক জমি ও দুটি বাড়ি রয়েছে তার। সেই সঙ্গে ব্যাংকে ১ কোটি ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকার বন্ড ও এফডিআর আছে এই পুলিশ কর্মকর্তার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *