সেই আইএএস কর্মকর্তা নিজেকে মানসিক প্রতিবন্ধীও বলেছিলেন

ভারতে সরকারি চাকরি পেতে প্রতিযোগিতামূলক আইএএস পরীক্ষা সহজে উতরে যেতে প্রতিবন্ধী কোটা সুবিধা পর্যন্ত নিয়েছিলেন সেই সমালোচিত কর্মকর্তা। ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে সম্প্রতি সরিয়ে দেয়া হয় শিক্ষানবিশ এই আইএএস কর্মকর্তাকে। ভারতের মহারাষ্ট্রের ওই প্রবেশনারি আইএএস কর্মকর্তা পূজা খেদকর নিয়মবহির্ভূতভাবে ক্ষমতার দাম্ভিকতা দেখিয়েছেন, এমন অভিযোগে তাকে পুনে থেকে ওয়াশিম জেলায় বদলি করা হয়।

নির্বাচন প্রক্রিয়া ছাড় পেতে ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশনে জমা দেয়া হলফনামায় নিজেকে দৃষ্টি ও মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী বলে দাবি করেছেন শিক্ষানবিশ সিভিল সার্ভিস কর্মকর্তা। তবে তার অক্ষমতা প্রমাণ করার জন্য বাধ্যতামূলক মেডিকেল পরীক্ষায় অংশ নেয়া ছয় বার এড়িয়ে যান তিনি।

এটা এখনও স্পষ্ট নয়, যে পরীক্ষায় উপস্থিত হতে অস্বীকার করার পরেও কিভাবে তাকে নিয়োগপত্র দেয়া হয়েছিল। বিভিন্ন তথ্যের বরাতে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিতে বুধবার (১০ জুলাই) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সে ২০২২ সালের এপ্রিলে প্রথম পরীক্ষাটি দিনক্ষণ নির্ধারিত ছিল। তিনি কোভিড-১৯ আক্রান্ত দাবি করে পরীক্ষা এড়িয়ে যান।

জুলাই এবং আগস্টে নির্ধারিত পরবর্তী দুটি পরীক্ষাও কোভিডের কারণ দেখিয়ে এড়িয়ে যান। সেপ্টেম্বরে ষষ্ঠ পরীক্ষায় আংশিকভাবে অংশ নেন। তবে সেখানে দৃষ্টিশক্তি প্রতিবন্ধী প্রমাণ করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এমআরআই টেস্ট পর্যন্ত করাতে দেননি তিনি।

কমিশন পরবর্তীকালে তার উত্তীর্ণ হওয়াকে চ্যালেঞ্জ করে এবং ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি ট্রাইব্যুনাল তার বিরুদ্ধে রায় দেয়। তবুও তিনি তার সিভিল সার্ভিস নিয়োগপত্র নিশ্চিত করতে পেরেছেন।

পূজা খেদকর নামের ওই তরুণী ইউপিএসসি পরীক্ষায় সর্বভারতীয় র‍্যাঙ্কিংয়ে ৮২১ তম হয়েছিলেন। তাকে পুনেতে একজন সহকারী কালেক্টর হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। শিক্ষানবিশ কর্মকর্তাদের দেয়া হয় না এমন সুযোগ-সুবিধা উপভোগ করার অভিযোগে তাকে নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। তিনি তার ব্যক্তিগত বিলাসবহুল অডি গাড়িতে সাইরেনসহ লাল-নীল বাতি এবং ‘মহারাষ্ট্র সরকার’ লেখা বোর্ড ব্যবহার করেছিলেন।

অতিরিক্ত কালেক্টর অজয় মোরের অনুপস্থিতিতে তিনি তার কক্ষ দখল করে নেন। তিনি মোরের সম্মতি ছাড়াই অফিসের আসবাবপত্র সরিয়ে ফেলেছিলেন এবং এমনকি রাজস্ব সহকারীকে তার নামে একটি লেটারহেড, নেমপ্লেট এবং অন্যান্য সুবিধার ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দেন।

এমন সব লঙ্ঘন ও দাম্ভিকতার অভিযোগ সামনে আসার পরে পুনের কালেক্টর সুহাস ডিভাসে রাজ্যের মুখ্য সচিব বরাবর চিঠি দেন। এরপরই ওই তরুণীকে পুনে থেকে ওয়াশিম জেলায় বদলি করা হয়।

২০২৩ ব্যাচের এই আইএএস কর্মকর্তা ওয়াশিম জেলায় সুপার নিউমারারি অ্যাসিস্ট্যান্ট কালেক্টর হিসেবে তার শিক্ষানবিশের বাকী সময়কাল পার করবেন,’ আদেশে বলা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা গেছে পূজার বাবা, যিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা ছিলেন, মেয়ের এমন সব অন্যায্য দাবি আদায়ে ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর কার্যালয়ের ওপরও প্রভাব খাটিয়েছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *