ক্যারিয়ারের সব অর্জনের বিনিময়ে হলেও এবারের ইউরো জিততে চেয়েছিলেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক হ্যারি কেইন। তবে তার সেই স্বপ্ন শেষ পর্যন্ত স্বপ্নই রয়ে গেছে। দুর্ভাগার তকমা ঘোচাতে পারেননি তিনি। ইউরোর ফাইনালে তার দল স্পেনের বিপক্ষে হেরেছে ২-১ গোলে। ইংল্যান্ডকে হতাশায় ডুবিয়ে চতুর্থ ইউরো ঘরে তুলেছে স্পেন। ২০১২ সালের পর ফের ইউরোপিয়ান সিংহাসনে বসেছে লা ফুয়েন্তের দল। ইউরোপের প্রথম দল হিসেবে জিতেছে চতুর্থ ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ।
ইউরোর সবশেষ আসরেও ফাইনাল খেলেছিল ইংল্যান্ড। সেবার দলটি হেরেছিল ইতালির বিপক্ষে। আর এবার দলটি হারল স্পেনের বিপক্ষে। বলতে গেলে তেমন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করতে পারল না ইংল্যান্ড। অথচ, ইতিহাসের প্রথম ইউরো জয়ের খুব কাছেই ছিল দলটি। প্রতিপক্ষ স্পেনের ফুটবলারদের চেয়ে নামেভারে তারকা খ্যাতিতে এগিয়ে ছিল ইংল্যান্ডের ফুটবলাররাই। তবে দিনশেষে হারটাই সঙ্গী হলো তাদের।
ম্যাচের শুরু থেকে বল দখলে দাপট দেখালেও ব্রিটিশদের গোলমুখে গিয়ে তেমন একটা সুবিধা করতে পারছিলেন না ইয়ামাল-অলমো-উইলিয়ামসরা। অন্যদিকে দুর্দান্ত স্প্যানিশ টিকিটাকায় ফ্যাকাশে ছিলেন কেইন-বেলিংহ্যাম-সাকারাও। দেখে মনে হচ্ছিল, আগ্রাসী হয়ে বিপদ ডাকতে রাজি ছিলেন না লুইস দে লা ফুয়েন্তে বা গ্যারেথ সাউথগেট কেউই।
ম্যাচের ১২তম মিনিটে ডি বক্সের সামান্য ভেতর থেকে নিকো উইলিয়ামসের গোলমুখে নেওয়া শট ব্লক করেন ইংলিশ ডিফেন্ডার জন স্টোনস। পরের মিনিটেই ইংলিশ ডি বক্সে উড়ে আসা নিকো উইলিয়ামসের ক্রসে বাইসাইকেল কিক নেন স্প্যানিশ ডিফেন্ডার নরম্যান্ড। কিন্তু গোলবারের অনেক বাইরে দিয়ে চলে যায় বল।
২৮ মিনিটে আবারও সুযোগ পায় স্পেন। এবার ফাবিয়ান রুইজের শট ব্লক করে দেন ইংলিশ ডিফেন্ডাররা। ৩৬ মিনিটে দানি ওলমোর দূরপাল্লার শট চলে যায় গোলবারের অনেক বাইরে দিয়ে।
৪৪ মিনিটে হ্যারি কেইনের ডিবক্সের ভেতরে নেওয়া বুলেট গতির শট ব্লক করেন স্পেনের রড্রি। ৪৫ মিনিটে ফ্রি কিক থেকে ডেকলাইন রাইসের ক্রসে ফিল ফোডেন বা পায়ের শট নিলে অনায়াসেই সেটিকে গ্লাভসবন্দি করেন উনাই সিমন।
পুরো প্রথমার্ধে বলার মতো সুযোগ ছিল এগুলোই। ৭০ শতাংশ বল দখলে রেখেও ইংলিশ রক্ষণে তেমন একটা ভয় ধরাতে পারেননি ফুয়েন্তের শিষ্যরা। অন্যদিকে কেইন-বেলিংহ্যাম-সাকারাও ছিলেন অনেকটাই নিষ্প্রভ। দুদলের এমন অতি সাবধানী ফুটবল খেলায় ম্যাড়মেড়ে গোলশূন্য এক প্রথমার্ধই দেখতে বাধ্য হয় ফুটবল বিশ্ব।
তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই এগিয়ে যায় স্পেন। ৪৭তম মিনিটে লামিন ইয়ামালের ক্রসে বক্সের বাঁ দিক থেকে বল জালে জড়িয়ে দেন নিকো উইলিয়ামস (১-০)।
দুই মিনিট পর নিকোই আরেকটি গোলের সুযোগ তৈরি করেছিলেন। এবার দানি ওলমোর বাঁ পায়ের শট একটুর জন্য ডানদিকের পোস্ট মিস করে। ৫৬তম মিনিটে নিকোর বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শটও বেশ ক্লোজ ছিল।
অবশেষে ৭৩তম মিনিটে সমতায় ফেরে ইংল্যান্ড। বেলিংহাম বক্সের মধ্যে বল পেয়ে সেটি কৌশলে দিয়ে দেন বাইরে দাঁড়ানো পালমারের কাছে। বাঁ পায়ের দূরপাল্লার এক শটে চোখ ধাঁধানো এক গোল করেন চেলসির উইঙ্গার (১-১)।
তবে সেই সমতা শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারেনি ইংল্যান্ড। ৮৬তম মিনিটে মিকেল ওয়ারজাবাল ফের এগিয়ে দেন স্পেনকে (২-১)। শেষ পর্যন্ত আর কোনো গোল না হওয়ায় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে স্পেন।