লালমনিরহাটে আদিতমারীতে নববধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার (৬ জুলাই) সকালে উপজেলার পশ্চিমপাড়া গ্রামে শ্বশুর বাড়ি থেকে ওই গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃত নববধূর নাম আঁখি মনি (১৭)। সে ওই এলাকার সৌদিপ্রবাসী শাকিল মিয়ার স্ত্রী। লালমনিরহাট পৌরসভার দক্ষিণ বত্রিশ হাজারী এলাকার আইনুল হকের মেয়ে আঁখি।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সৌদি আরব প্রবাসী শাকিল মিয়ার সঙ্গে ১০ মাস আগে ভিডিও কলের মাধ্যমে বিয়ে হয় আঁখি মনির। প্রতিদিনের মতো শুক্রবার রাতে পরিবারের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া শেষে নিজের কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন আঁখি। শনিবার সকালে তাকে ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে তার শ্বশুর। পরে তাকে উদ্ধার করে আদিতমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এদিকে আঁখির শয়ন কক্ষে খণ্ড খণ্ড চিরকুট পাওয়া যায়। খণ্ড খণ্ড চিরকুট মিলিয়ে দেখা যায়, এতে লেখা রয়েছে, ‘আব্বু-আব্বু তোমরা আমাকে ক্ষমা করো। তোমরা আমাকে আগামীকাল সকাল ১১টায় নিয়ে যাবা, আমার জীবনে কিছু নেই তোমরা আমাকে ক্ষমা করো।’
আঁখির বাবা আইনুল হক বলেন, ‘আমার মেয়ে রাতে ফোন দিয়ে শ্বশুর-শাশুড়ির নির্যাতনের কথা বলেছে। রাতেই তাকে নিয়ে আসতে বলেছিল। আমি সকালে নিতে যাবো বলেছিলাম। তার আগেই আমার মেয়ের মৃত্যু হলো। সে নির্যাতনের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমি এর বিচার চাই।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে আখির শ্বশুর-শাশুড়ি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ উন নবী বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে আঁখি আত্মহত্যা করেছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা নেয়া হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘চিরকুটে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করেননি। তবে মরদেহ মর্গে নিয়ে না কাটার অনুরোধ জানায়। এ ঘটনায় আঁখির পরিবার তার শ্বশুর–শাশুড়ির বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ করেছেন।